মঠবাড়িয়ায় ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষের আগেই চূড়ান্ত বিল প্রদান! জনমনে ক্ষোভ

বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌর শহরের ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বাড়তি সুবিধা নিয়ে ঠিকাদারকে চূড়ান্ত বিল পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যে কারনে পৌর শহরের চলমান আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ যেনতেন ভাবে করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানাগেছে, পিরোজপুরের চরখালী-মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা সড়কের মঠবাড়িয়া অংশে ১.৬৬ কিলোমিটার রিজিড (রাস্তা ঢালাই করন) পেভমেন্ট, ২.৪০ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ (মঠবাড়িয়া বাজার অংশ) এবং বরগুনা অংশে ০.৬২৫ কিলোমিটার রিজিড পেভমেন্ট (রাস্তা ঢালাই আরসিসি ঢালাই করন) এবং ২০.৩৭ কিলোমিটার বর্ধিত ও মজবুতিকরণ সহ কার্পেটিং কাজ (ডিবিএস বেস কোর্স কাজ) এর ৩৬ কোটি ৪৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ধরে দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্রে অংশ নিয়ে হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড-ওয়েষ্টার কন্সট্রাকশন এন্ড শিপিং কোম্পানী লিমিটেড জেভি (জয়েন্ট ভেঞ্চার) ৩০ কোটি ৮৭ লাখ টাকায় কাজটি পায়। এ কাজের মধ্যে ড্রেন নির্মাণ কাজ রয়েছে ১০ কোটি ৮১ লাখ টাকার। কিন্তু এ কাজ শেষ করার আগেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে গেল বছরের ২৯ জুন চূড়ান্ত বিল দেয়া হয়েছে। যে কারনে বর্তমানে পৌর শহরের চলমান আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ যেনতেন ভাবে করা হচ্ছে, এমনকি ৬ ফুটের পরিবর্তে ৪ ফুট চওড়া (প্রস্থ) করা হচ্ছে। কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি মিশ্রিত পাথর। যার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। আলী রেজা রঞ্জু নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তি তার ফেসবুক আইডিতে কাজে মাটি মিশ্রিত পাথর ব্যবহারের ছবি ভাইরাল করেছেন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা আ‘লীগ সহ-সভাপতি আরিফ উল হক বলেন, সরকার এ সড়ক সংস্কার ও ড্রেন নির্মাণের অর্থ বরাদ্ধ দিল কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত বিল দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছে পিপড়ার গতিতে। মানও খারাপ হচ্ছে। তিনি দাবী করেন অনৈতিক সুবিধা ছাড়া প্রকৌশলীরা এ বিল দেননি।

কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলী আকবরের কাছে ড্রেন নির্মান কাজ শেষ হওয়ার আগেই কেন বিল দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিল দেয়া হয়নি। এরপর তাকে বলা হয় ২০২১ সালের ২৯ জুন চূড়ান্ত বিল দিয়েছেন এ প্রমাণ তো আছে, তখন তিনি আর কথা বলেন নি।

পিরোজপুর সড়ক বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে বরিশাল সড়ক বিভাগে আছেন) মাসুদ মাহমুদ সুমন এর মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভি করেননি।

সড়ক বিভাগের বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কেএম আজাদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অল্প কয়েকদিন হল বরিশালে যোগদান করেছেন বলে জানান। তিনি বিষয়টি নিয়ে পিরোজপুর জেলা অফিসে যোগাযোগ করার কথা বলে কৌশলে এড়িয়ে যান।