এহসান গ্রুপের সম্পত্তি ক্রোক অবস্থায় দুই ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানে তালা খুলে প্রবেশ করার ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল

সৈয়দ বশির আহমেদ (পিরোজপুর প্রতিনিধি:) পিরোজপুর এহসান গ্রুপের সম্পত্তি ক্রোক থাকা অবস্থায় দুই ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানে তালা খুলে প্রবেশ করে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পিরোজপুর শেরেবাংলা পাবলিক লাইব্রেরির চতুর্থ ফ্লোরে এহসান গ্রুপের প্রতিষ্ঠানে তালা খুলে প্রবেশ করতে, জানা যায় প্রবেশ কৃত ব্যক্তি ওই মার্কেটেট সিকিউরিটি গার্ড মোঃ ইমরান চৌধুরী (৩২) পিতা সালাম চৌধুরী অপর ব্যক্তির নাম- আবু রায়হান পিতা- তোফাজ্জল হোসেন, জানাযায় তার বাড়ি শৈলকুপা, ঝিনাইদাহ।

সিআইডি ঢাকার ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) বিভাগের তদন্ত কর্মকর্তা জানান বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত ৯ জুলাই ২০২২ইং তারিখ এহসান রিয়েল স্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন পিরোজপুর জেলা জজ আদালত। হালাল বিনিয়োগের নামে ধর্মীয় প্রতারণার ফাঁদে ফেলে লাখো মানুষের বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসার পর ৯ জুন আদালত এ আদেশ দেন।

সোমবার রায়ের কপি সাংবাদিকদের হস্তগত হয়। আদালতের আদেশে বলা হয়, এহসান গ্রুপ দেশের ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষকে ধোকা এবং প্রতারণার মাধ্যমে ১৪৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও বিভিন্নপ্রতিষ্ঠানের নামে গ্রহন করে বহু সম্পদের মালিক বনে গেছেন।

মামলায় এজাহার নামীয় আসামিদের ও তাদের সব নিকটাত্মীয়ের স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়ের অর্থের উৎস গোপন করায় মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ১৪৩ ধারা মোতাবেক রাগীব আহসান গংদের নামের অনুকূলে ৪০টি দলিল এবং রাগীব অহসান তার ভাই আবুল বাশার, খাইরুল ইসলাম, শামীম হাসান, মাহমুদুল হাসান ও রাগীব আহসানের স্ত্রী সালমা আহসানের নামে মোট ৫টি বিক্রয়কৃত দলিল ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হলো।

সিআইডি ঢাকার ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম (অর্গানাইজড ক্রাইম) বিভাগের তদন্তে জানা যায়, হালাল ব্যবসায় বিনিয়োগের নামে হাজার হাজার মানুষকে নিঃস্ব করে এহসান গ্রুপের কর্ণধার মুফতি রাগীব আহসান ও মামলার অন্য আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা নিয়ে তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ৯টি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো নূর-ই-মদিনা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট একাডেমি, নূরজাহান মহিলা মাদ্রাসা, পিরোজপুর বস্ত্রালয়, আল্লাহর দান বস্ত্রালয়, মক্কা এন্টারপ্রাইজ, বিসমিল্লাহ ট্রেডার্স, সাহাবা হজ কাফেলা ও এহসান সাউন্ড সিস্টেম। এই প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও আসামিরা নিজেদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা গচ্ছিত রাখে। তারা প্রতারণার মাধ্যমে ১০১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন ও ভোগ বিলাশে ব্যয় করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ লংঘন করেছে।

এহসান গ্রুপের অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৯টি মামলা রয়েছে। সর্বশেষ সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান ও তার স্ত্রী সালমা আহসানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সি আই ডি।