সরকারি খালে অ-পরিকল্পিত ঝুঁকিপূর্ন সেতু নির্মান: প্রাণহানীর আশংকা।

মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের চল্লিশ কাহনিয়ায় দেড়শত বছরের সরকারি খালে আইন ও সরকারি বিধি-বিধান লঙ্গন করে এক পরিবারের স্বার্থে ব্যক্তি উদ্যোগে অ-পরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ন সেতু নির্মান চলছে। ফলে নৌযান ও পানি চলাচল ব্যাহত হবে।

 ঝুঁকিপুর্ন ও অপরিকল্পিত সেতু নির্মান বন্ধের জন্য স্থানীয় লোকজনের পক্ষে মামুনুর রশীদ নোমানী নামে এক ব্যক্তি রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রাজাপুর থানা অফিসার ও এলজিইডি অফিসারের বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। লিখিত আবেদন ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের চল্লিশকাহনিয়ায় (মৃধা খাল নামে পরিচিত) দেড়শত বছরের সরকারি খালে আইন ও সরকারি বিধি -বিধান অমান্য করে ব্যক্তি উদ্যোগে একটি সেতু নির্মান করতেছে।

সেতুটি এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএর প্রত্যায়ন ছাড়াই নির্মান করা হচ্ছে। অ-পরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ন এই সেতুতে প্রাণহনীর আশংকা রয়েছে। সেতুটি নির্মানের ফলে সাধারন মানুষের কোন উপকার হবেনা। ব্যক্তিস্বার্থের এই সেতুটি নির্মান হলে সরকারি এ খালটিতে পানির প্রবাহ কমে যাবে।নৌযান চলাচল বিঘ্নিত হবে। পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে। মানুষের প্রাণহানী ঘটতে পারে। সেতুটি বিধ্বস্ত হলে মানুষ এবং মানুষের সম্পদ নষ্ট হওয়ার আশংকা করেছেন এলাকার সচেতন লোকজন।

অ-পরিকল্পিত ও ঝুকিঁপুর্ন এ সেতুটি নির্মানের ফলে সাধারন মানুষের প্রাণহানী, সহায়- সম্পদ বিনষ্ট এবং পানির প্রবাহ বন্ধ হলে এর দায়দ্বায়িত্ব কে নিবে? বলে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারন মানুষ। চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামের মৃত আতাহার আলীর পুত্র সাইদুল ও কামরুল সেতুটি নির্মান করতেছে। জনবহুল এ খালটিতে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক ও পানির প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য এলজিইডি বিভাগ খালটি খনন কাজ করতেছে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে। ফলে জেলে সম্প্রদায় ও কৃষকরা উপকৃত হবে। উপকৃত হবে শত শত পরিবার।

 বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করা স্থানীয় বাসিন্দা মামুনুর রশীদ নোমানী বলেন, সেতুটি নির্মান হলে সরকারি অর্থে খালটি খননের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। সাধারনভাবে পানি চলাচল বন্ধ হলে নাব্যতা কমে যাবে। গচ্চা যাবে খাল খননের জন্য সরকারের লাখ লাখ টাকা। সরকারি খালে সরকারি আইন বিধি-বিধান লঙ্গন করে একটি ঘরের কয়েকজন ব্যক্তির স্বার্থে, ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মানাধীন সেতুটি বন্ধের জন্য এবং নির্মিত অংশ উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট। এব্যাপারে সাইদুল বলেন, আমরা টাকা দিয়া নিজেদের চলার জন্য সেতু নির্মাণ করতেছি আমাদের খালে তাতে সরকারের কি? সরকারের টাকা দিয়ে তো নির্মাণ করতেছি না।

 এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার আবেদনের কথা স্বিকার করে বলেন, আমরা সরেজমিনে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মু: আতাউর রহমান বলেন, আবেদন পেয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিসের একজন এসআইকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, আবেদন পেয়ে থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন সরকারি খালে একটি পরিবারের ব্যক্তি স্বার্থে ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মানাধীন ঝুঁকিপুর্ন সেতুটির নির্মানকাজ জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জোড় দাবী জানিয়েছে।