শ্রীমঙ্গল উপজেলায় মাল্টার সফল চাষ হচ্ছে

শ্রীমঙ্গলে মাল্টা চাষ সফল হয়েছে। ২০১৭ সালে শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো মাল্টা চাষ শুরু হয়। স্হানীয় কৃষি অফিসের প্রচেস্টায় এখন শ্রীমঙ্গলে মাল্টার ৫০ টি প্রদর্শনী প্লটসহ আরও ১৫ টির মতো ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে।

 

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি জানান, ২০০৩ সালে বারি মাল্টা-১ নামে মাল্টার উন্নতজাত উদ্ভাবনের পর দেশের বিভিন্ন স্হানে মাল্টার সফল চাষ হচ্ছে। তিনি জানান, এটি নিয়মিত ফলদানকারী উচ্চ ফলনশীল জাত। ফল গোলাকার ও পাকা ফলের রঙ সবুজ। খুবই রসালো, খেতে মিস্টি ও সুস্বাদু। হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ২০ টন।

 

মোনালিসা সুইটি আরো বলেন, কৃষি অধিদপ্তরের ‘সাইট্রাস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের’ আওতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো মাল্টা চাষ শুরু হয়। সে অনুযায়ী, স্হানীয় কৃষি অফিস মাল্টা চাষীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনসহ চারা, সার, কীটনাশক বিনামুল্যে সরবরাহ করেন। গত ৩ বছরে এখন গাছে প্রচুর মাল্টা শোভা পাচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেছেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে শ্রীমঙ্গলের মাল্টা এখানকার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় পাঠানো সম্ভব হবে।

 

শ্রীমঙ্গলের নোয়াঁগাও গ্রামে দু’টি প্লটে ৪০ শতক জমিতে মাল্টা চাষ করেছেন আব্দুল মুহিত ( মুরাদ) । তিনি ২০১৭ সালে তার দু’টি প্লটের ৪০ শতক জায়গায় ১২০টি মাল্টার চারা রোপন করেন। ২০১৯ সালে তার বাগানে মাল্টা ফল আসতে শুরু করে। প্রথমবারের মাল্টা ফল তিনি আত্নীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে বিলি-বন্টন করে দেন। মুরাদ বলেন, আগামী বছর তিনি মাল্টা বিক্রি করে ২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশাবাদী। মুরাদ আরো জানান, স্হানীয় কৃষি অফিস তাকে প্রণোদনা বাবদ মাল্টার চারা, সার, কীটনাশক ও পরিচর্যা বাবদ প্রণোদনা দিয়েছেন। তিনি নিয়মিত জমি পরিচর্যা করছেন। তিনি নিয়মিত আগাছা পরিস্কারসহ পোকা-মাকড় দমনের জন্য নিয়মিত
বাগান দেখভাল করে থাকেন।

 

কৃষি অফিস সুত্র জানায়, শ্রীমঙ্গলের মাটি, আবহাওয়া, জলবায়ু মাল্টা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তাছাড়া দেশের পাহাড়ি এলাকায় বারি মাল্টা-১ চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। পাহাড়ি ঢালু জমিতে মাল্টা চাষ ভাল হয়ে থাকে। এসব বিবেচনায় শ্রীমঙ্গলসহ বৃহত্তর সিলেটের পাহাড়ি এলাকায় মাল্টা চাষের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল।

 

উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রথীন্দ্র দেব বলেন, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মাল্টা একটি সুস্বাদু ফল। সাইট্রাস ফলের মধ্যে এটি অন্যতম জনপ্রিয় ফল। মাল্টা চাষিরা যদি নিয়মিত পরিচর্যা, আগাছা দমন, সেচ ও কীটনাশক স্প্রে করেন এবং যত্নবান হোন তবে সামান্য খরচে প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদিত মাল্টা বিক্রি করে প্রচুর লাভবান হতে পারেন। তিনি বলেন, প্রতি বিঘাতে ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ করে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করতে পারেন।

 

তিনি বলেন, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা প্রদর্শনী প্লটগুলো নিয়মিত পরিদর্শন ও দেখভাল করছেন এবং চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।

তথ্য ও ছবিঃ ফোকাস বিডি ২৪.কম