গ্রামীণ জনপদে শৈশবের দুরন্তপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল বন্ধ, খালে গোসল ও ধানক্ষেতে ফুটবল

মো. নাঈম, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ- কোভিড-১৯ থাবায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় খেলার মাঠগুলোও ফাঁকা রয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত খেলাধুলা নেই। ফাঁকা মাঠে এবার জন্ম নিচ্ছে সবুজ ঘাস। মুক্ত মাঠে শিশুরা কবে যাবে, তাও অনিশ্চিত! চৈত্রের কাটফাটা রোদে হাসফাস করছে প্রাণিকূল। পুর্ণিমার জোঁ’তে চাপ বেড়ে ওঠেছে পানির। নদীমাতৃক অঞ্চলের উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালী, হলতা, গাবখান নদীর পানিতে ভরে গেছে প্রত্যন্ত এলাকার খাল, পুকুর, ডোবা ও নালা। ঠিক সেই সময়ে দেখা মিলল ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান-ধানসিড়ি ইউনিয়নের ছত্রকান্দা এলাকায় ধানক্ষেতে ফুটবল খেলা। উঠতি বয়সী কিশোররা পাকা ধান কাটার পর পরিত্যক্ত ধানক্ষেতে চলছে ‘শৈশবের দুরন্তপনা’। খেলা শেষ হলেই পাশ্ববর্তি খালে নেমে মেতে ওঠে গোসল উৎসবে। সেখানেও তারা “নইল খেলা” নামের একধরনের খেলায় প্রতিযোগিতা করে। কর্দমাক্ত পানিতে ফুটবল নিয়ে শিশুদের এ দৃশ্য দেখতেও চারদিকে দর্শকও হাজির হন। এমন দৃশ্য দেখা গেল বৃহস্পতিবার পড়ন্ত বিকালে। শিশুদের এ দুরন্তপনা দেখে সবাই হারিয়ে যায় শৈশবে। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সায়েম’র প্রশ্ন, স্যার আমরা কবে স্কুলে যাব, বন্ধুদের নিয়ে কবে খেলতে পারব? যদিও এ প্রশ্নের উত্তর কারো জানা নেই। তবে নতুন সূর্যোদয়ে আসুক মুক্তির-এটাই সবার প্রত্যাশা। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য, কৃতী ফুটবলার ও ঝালকাঠি কালেক্টরেট স্কুলের ক্রিড়া শিক্ষক নুরুন্নবী বলেন, বন্দিদশা থেকে মুক্তি ডাক মনে হল শিশুদের এই ছুটাছুটি দেখে। এদের দুরন্তপনা দেখে আবার ফিরে যেতে ইচ্ছে হয় শৈশবে ফিরে যেতে। খেলতে থাকা কিশোর রফিক জানায়, বাড়িঘরে থাকতে থাকতে খুব খারাপ লাগছে। তাই একটু বের হয়েছি। ওদের দুরন্তপনা দেখে এ প্রতিবেদক ক্যামেরা বের করতেই শিশুরা ভয়ে ছুটতে থাকে বাড়ির দিকে।করোনাভাইরাসের কারণে বাহিরে বের হওয়া নিষেধ, করোনাভাইরাসের এ ভয় আর আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। এলাকার লোকজন তাদের আশ্বস্ত করে আবারও খেলার মাঠে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। শিশুদের এ দুরন্তপনা অবশ্য দর্শক সারিতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যেকেই নিয়ে যায় তাদের শৈশবে।