আজ ১৫ নভেম্বর ভয়াল সুপার সাইক্লোন সিডর দিবস

আজ ১৫ নভেম্বর ভয়াল সুপার সাইক্লোন সিডর দিবস। ২০০৭ সালের এদিন সন্ধা সাড়ে ৭টায় ঘন্টায় ২১০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন সামুদ্রিক সুপার সাইক্লোন সিডরের মুলকেন্দ্রটি প্রথম আঘাতহানে বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলায় ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সবকিছু। সুন্দরবন থেকে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা নোয়াখালী উপকূলের বিশাল জনপদে প্রায় দু'ঘন্টা ধরে লন্ডভন্ড করে গভীর রাতে দূর্বল হয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে। নিহত-আহত নিখোঁজ হয় হাজার-হাজার মানুষ। কয়েক লাখ ঘরবাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ন বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয়হীন পড়ে। গৃহহীন এসব র্দূগত মানুষের ঠিকানা হয় খোলা আকাশের নিচে সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রে। এই জনপদের যোগাযোগ ব্যবস্থা গাছপালা উপড়ে ভেঙ্গে পড়ে সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একই সাথে বিদ্যুৎ, টেলিফোন মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সরকারি হিসেবে সিডরের মৃতের সংখ্যা হাজার শতে পৌঁছায়। বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার হিসেবে মৃতের সংখ্যা হাজারে দাড়ায়। সিডরের তিন সপ্তাহ পরও খুঁজে পাওয়া যায় অনেকের লাশ। বাগেরহাট জেলায় সরকারী হিসেবে মারা যায় ৯০৮ জন মানুষ। শরণখোলা উপজেলায় মৃতের সংখ্যা দাড়ায় ৬৯৫ জনে। এই জনপদের শুধুমাত্র সাউথখালী ইউনিয়নেই মারা যায় ৬৬৮জন। এসব জেলাগুলোর উপকূলীয় জনপদে এমন লোক মেলাভার যে, তাঁদের পরিবারের একাধিক সদস্য বা স্বজন সিডরে নিহত হয়নি।

সুপার সাইক্লোন সিডরে সেই ভয়াল দু:সহ স্মৃতি নিয়ে আজও তাড়া করছে ক্ষতিগ্রস্থ উপকূলবাসিকে। আজ সিডরের এগারতম বাষির্কীতে তাই নিহত নিঁখোজদের পরিবারের সদস্য স্বজনেরা দিনভর খতমে কোরআন, মিলাদ-দেয়া মাহফিল, কবর জিয়ারত, স্মরনসভাসহ অন্যান্য ধর্মালম্বিরা তাঁদের ধমীয় নিয়মে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করছে।